ঢাকা Friday, 26 April 2024

চবিতে ছাত্রী নিপীড়ন : ৩ ছাত্রকে রোববারের মধ্যে বহিষ্কার

সারাদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: 21:35, 23 July 2022

চবিতে ছাত্রী নিপীড়ন : ৩ ছাত্রকে রোববারের মধ্যে বহিষ্কার

ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে আগামীকাল রোববারের (২৪ জুলাই) মধ্যে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন চবি উপাচার্য শিরীণ আখতার।

শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪তম বার্ষিক সিনেট সভায় উপাচার্য এ ঘোষণা দেন।

শিরীণ আখতার বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করেছে র‍্যাব। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিনজন। এটা খুব লজ্জার সঙ্গে বলতে হচ্ছে। তাদের আজ অথবা আগামীকালের মধ্যেই বহিষ্কার করা হবে।
 
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, এটি খুবই লজ্জাজনক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত এ ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন ৷ তিনি বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠিয়েছেন।

এদিকে সিনেট সভায় দেয়া বক্তব্যে যৌন নিপীড়নের এ ঘটনায় শিক্ষকদের প্রতিবাদ আরো জোরালো হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান। ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, চবির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। চারজনের মধ্যে দুজন ছাত্রলীগের কর্মী। বাকি দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। 

তারা হলেন - মেহেদী হাসান ওরফে হৃদয়, আজিম হুসেন, নূরুল আবছার বাবু ও বহিরাগত নূর হোসেন শাওন। তাদের মধ্যে মেহেদী ও আজিম ছাত্রলীগ কর্মী। মেহেদী ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ ও আজিম ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

শুক্রবার (২২ জুলাই) রাতে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে র‍্যাব।

এর আগে ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। এর একদিন পর গত বুধবার তিনি মামলা করেন হাটহাজারী থানায়।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বুধবার থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে চবি ক্যাম্পাস। রাতেই ছাত্রীরা হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। ওইদিন রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে চার কার্যদিবসের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন। অন্যথায় প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ করবে বলে জানান তিনি। এরপর শিক্ষার্থীরা চার কার্যদিবসের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে প্রতিবাদী গানের আয়োজন করেছেন।

এদিকে ওই ঘটনার ‘হোতা’ হিসেবে গ্রেফতার আজিমকে ছাত্রলীগের সমর্থক হিসেবে স্বীকার করলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেছেন, এই অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না।