ঢাকা Thursday, 09 May 2024

রাজধানীতে টানা ২৫ দিন ফ্ল্যাটে আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ

স্টার সংবাদ

প্রকাশিত: 22:14, 31 March 2024

রাজধানীতে টানা ২৫ দিন ফ্ল্যাটে আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাটে এক তরুণীকে টানা ২৫ দিন শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতন এবং সেই চিত্র ভিডিও করেছে তিন যুবক। এ ঘটনায় ওই তরুণদের সাহায্য করেছেন এক নারী।

পরে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ‘৯৯৯’-এ খবর পেয়ে গত শনিবার (৩০ মার্চ) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় নির্যাতিত তরুণী মামলা করেছেন। মামলার চার আসামি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আসামি তিন যুবক হলো - সান (২৬), হিমেল (২৭) ও রকি (২৯)। এছাড়া তাদের সহায়তাকারী নারী আসামির নাম সালমা ওরফে ঝুমুর (২৮)। তিনি এক প্রবাসীর স্ত্রী।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন জানান, ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণী শনিবার মামলা করেছেন। আসামিদের শনাক্তের পর তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভিকটিমের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তরুণীকে উদ্ধৃত করে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি ঘটেছে মোহাম্মদপুরের নবীনগর এলাকার একটি বাড়ির চারতলার এক ফ্ল্যাটে। সেখানে গত ৫ মার্চ থেকে ওই তরুণীকে আটকে রাখা হয়েছিল। 

মামলার বিবরণে বলা হয়, বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ওই তরুণী তার বড় বোনের বাসায় থাকতেন। সে সময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরে ওই যুবকের মাধ্যমে সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে পরিচয় হয় তরুণীটির। এক পর্যায়ে বোনের বাসা ছেড়ে সালমার সঙ্গে নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন ভুক্তভোগী।

পরবর্তীকালে ঝুমুরের মাধ্যমে সান নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। একসময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবীনগরের ওই বাসায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি তরুণীটিকে প্রথম ধর্ষণ করেন সান। পরবর্তীকালে ২৭ ফেব্রুয়ারিও তাকে ধর্ষণ করা হলে তরুণীটি বিয়ের জন্য চাপ দেন। তখন সান তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের আশ্বাস দেয়। এসময় বিয়ে না করলে থানায় গিয়ে মামলা করার হুমকি দেন তরুণী। তখন সান তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

গত ৫ মার্চ দুপুরে বন্ধু হিমেল ও রকিকে নিয়ে ওই বাসায় এসে সান তরুণীটিকে জানায়, সে তাকে সারপ্রাইজ দেবে। তখন তরুণীটিকে সে চোখ বন্ধ করতে বলে। সে সময় সালমা খাবার আনার কথা বলে ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।

এদিকে সানের কথামতো চোখ বন্ধ করলে ওই তিন যুবক তার হাত, পা ও চোখ বেঁধে ফেলে এবং মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়। পরে সালমার কথায় হিমেলকে পাহারায় রেখে অন্যরা শেকল আনতে চলে যায়। এ সময় একা পেয়ে হিমেল ধর্ষণ করে তরুণীটিকে।

ভুক্তভোগী জানান, সেই দিন থেকে শেকল দিয়ে তার হাত ও পা বেঁধে রাখা হয়। এর একদিন পর ৭ মার্চ রকি ওই বাসায় গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষকদের সহায়তাকারী সালমা শুধু খাবার ও বাথরুমে যাওয়ার সময় তরুণীটির পায়ের শেকল খুলে দিতেন।

পরদিন সানের ধর্ষণের ভিডিওচিত্র সালমা মোবাইলে ধারণ করেন। এরপর থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ওই তিন যুবক তরুণীটিকে ধর্ষণ এবং সেই চিত্র ভিডিও করেন। এতে সহায়তা করেন সালমা।

গত ৩০ মার্চ রাতে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে জানালা দিয়ে চিৎকার করে স্থানীয় এক ব্যক্তির দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন তরুণীটি। পরে ওই ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে তাকে ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করে।