ঢাকা Monday, 06 May 2024

হাজীগঞ্জে শিশুসন্তান নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন গৃহবধূ 

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 19:16, 24 April 2024

হাজীগঞ্জে শিশুসন্তান নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন গৃহবধূ 

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দেড় বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ। 

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রামমুখী সাগরিকা এক্সপ্রেসের নিচে তিনি সন্তানসহ ঝাঁপ দেন।

আত্মহননকারী দুই সন্তানের জননী হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা গ্রামের দেওয়ানজী বাড়ীর রফিকুল ইসলামের মেয়ে তাহমিনা আকতার রিমা (২৪)। তার সাড়ে ৪ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে।

জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে গত ২৮ মার্চ রিমা তার স্বামী একই উপজেলার ২নং বাকিলা ইউনিয়নের স্বর্ণা গ্রামের হাওলাদার বাড়ির নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে মাসুদুজ্জামান হাওলাদার (৪০), তার ভাসুর মামুন হাওলাদার (৫৫) ও মাহবুব হাওলাদারের (৫০) বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রিমার বাবা তার স্বামী মাসুদুজ্জামানকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে কুয়েতে পাঠান। বিদেশ যাওয়ার পর থেকে মাসুদ রিমাকে ভরণপোষণ না দিয়ে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে রিমা বাধ্য হয়ে মাসুদকে তালাক দেন। 

তালাকের পরও মাসুদ ইমোতে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও প্রাণনাশের হুমকি এবং স্বামী-স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেন রিমাকে। 

এসব ঘটনা রিমা তার ভাসুরদের জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাকেই হুমকি-ধমকি দেন।

এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে রিমার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন।

এক পর্যায়ে অপমান ও হুমকি-ধমকি সহ্য করতে না পেরে তার দেড় বছর বয়সী সন্তান আবদুর রহমানকে নিয়ে রিমা ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। 

এদিকে আত্মহত্যার আগে রিমা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘আমার আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়, আমার মেয়েকে সবাই যেন দেখে রাখে’ - এমন পোস্ট দেন। 

বর্তমানে বিষয়টি হাজীগঞ্জে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে রিমার অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহমান বলেন, আমি বিবাদীদের বাড়িতে গিয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, আত্মহত্যার ঘটনাটি যেহেতু ট্রেনলাইনে ঘটেছে তাই জিআরপি পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এসআই আবদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, বিবাদীদের বাড়িতে তদন্তে গিয়েছিলেন।

এদিকে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মা ও শিশুসন্তানের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ আলম।

এছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন সোহেল।