আজ ৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১’র মহান মক্তিযুদ্ধের আজকের এইদিনে পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় ঘেষা হাওর বেষ্টিত ও সীমান্তবর্তী উপজেলা সুনামগঞ্জের তাহিরপুর।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশ মাতৃকার টানে বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজি রেখে বর্বর পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে হানাদাররা তাহিরপুর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় আজকের এই দিনে। পাক হানাদারদের বিতারিত করার মধ্যদিয়ে তাহিরপুরে ওইদিনই ওড়ানো হয় লাল সবুজের বিজয় নিশান।
এদিকে তাহিরপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আ. লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের উদ্যোগে র্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার হাজী রৌজ আলী সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন- তাহিরপুর উপজেলা ৫ নম্বর সেক্টরের টেকেরঘাট ৪ নম্বর সাব সেক্টরের বড়ছড়া, টেকেরঘাটের অধীনে ছিল। এদিনে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাত জেগে যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীদেরকে পরাজিত করেন। উপজেলা সদরে অবস্থানরত পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তারা নানা পরিকল্পনা করি আমরা। এক সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে হানাদাররা তাহিরপুর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। আর সেদিনই তাহিরপুরে ওড়ানো হয় লাল সবুজের বিজয় নিশান।
তিনি বলেন- পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোর ৪ টার পরপর মেজর মুসলেদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে পাক হানাদারদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পাক হায়েনারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আনন্দে সবার মুখে উচ্চারিত হয় ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ প্রতিধ্বনি। শুরু হয় আনন্দ মিছিল। সেদিন মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠেছিল তাহিরপুর।
এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আজকের এইদিনে আমার সাথে হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে মহান আল্লাহ্’র ডাকে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। আমি ৭১’র মহান মুক্তিযোদ্ধে সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ ৭৫’র ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা জানিয়েছেন, দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে উপজেলা প্রশাসন নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।