খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে তার গুলশানের বাড়ি এখনই ছাড়তে হচ্ছে না। কারণ এই বাড়ি ছাড়তে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছে আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সালাম মুর্শেদীর আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২৪ মার্চ) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম চেম্বার আদালতে এ আদেশ দেন।
আইনজীবীরা বলছেন, এই আদেশের ফলে আগামী আট সপ্তাহ সালাম মুর্শেদীর বাড়িটি এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থাতেই থাকবে।
এর আগে ১৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চ এক রায়ে গুলশান ২ নম্বরের ১০৪ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়িটি ছাড়তে সালাম মুর্শেদীকে আদেশ দেন।
আপিলে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও এম. সাঈদ আহমেদ রাজা। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অনীক আর হক।
তিনি জানান, হাইকোর্টের রায়ের ওপর আট সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। এই আট সপ্তাহ সালাম মুর্শেদী ওই বাড়িতেই থাকতে পারবেন। এরপর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, গুলশানের ওই সম্পত্তির দখল ও অবস্থানের ওপর দুই পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। ফলে গুলশানের বাড়িটি আপাতত সালাম মুর্শেদীর দখলেই থাকছে।
প্রসঙ্গত, সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশান ২-এর ১০৪ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়িটি ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তি’ দাবি করে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর করা সেই আবেদনে দুদক, রাজউক ও গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সেই সঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন আদালত।
২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর বাড়িটি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বাড়িটি নিয়ে রাজউক তার প্রতিবেদন দাখিল করে হাইকোর্টে। এতে বলা হয়, বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই। সে সময় ওই বাড়ির নকশাও (মূল লে-আউট প্ল্যান) আদালতে জমা দেয় রাজউক।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রিটের পক্ষে শুনানিতে অ্যাডভোকেট অনীক আর হক ও সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছিলেন, হাইকোর্টে রাজউক ও দুদকের দাখিল করা প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে, গুলশানে সালাম মুর্শেদী যে বাড়িতে বাস করছেন সেটা রাষ্ট্রের সম্পত্তি। এই বাড়িতে তিনি এখন এক মুহূর্তও থাকতে পারেন না। পরে গত ৩ মার্চ মামলার শুনানি শেষ হয়।