ছবি: স্টার সংবাদ
উৎপাদন ইতিহাসে পাথর উত্তোলনের আরো একটি নয়া মাসিক রেকর্ড গড়েছে দিনাজপুরের পার্বতীপুর মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) । দেশের একমাত্র বৃহৎ বাণিজ্যিক উৎপাদনে থাকা এই খনিটি দ্বিতীয় দফায় চুক্তির পর গত মে মাসে মাসিক উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাকে আবারো ছাড়িয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে গত মে মাসে এক লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টনের উপরে সর্বোচ্চ পাথর উত্তোলন করেছে খনির বর্তমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)।
গত ২০০৭ সালের ২৫ মে পাথর খনির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উত্তোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে ৫০০ কোটি টাকার বেশি লোকসানের বোঝা নিয়ে খনিটি বন্ধের উপক্রম হয়। ইতিপূর্বে এক মাসের মধ্যে এতো পরিমাণ পাথর উত্তোলন করা কখনোই সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় দফা চুক্তির আলোকে মাসিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খনির একটি সূত্র জানায়, লোকসানে চলা পাথর খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে গত ২০১৩ সালে জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর সাথে খনি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষন, উৎপাদন এবং পরিচালনা চুক্তি হয়। পরে জিটিসি খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে। প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও নানা প্রতিকূলতার মাঝেও জিটিসি গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর থেকে টানা চার অর্থ বছরে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। ফলে পাথর উত্তোলনে জিটিসি’র এই সফলতার পর প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদ শেষে জিটিসি’র সাথে নতুন করে আবারো খনি কর্তৃপক্ষের ছয় বছরের জন্য চুক্তি হয়।
দ্বিতীয় দফার এই চুক্তির আলোকে মাসিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন। দ্বিতীয় দফা চুক্তির প্রথম বছরে নির্ধারিত সময়ে বাৎসরিক উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী পরিমাণ পাথর উত্তোলন করে জিটিসি তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে এবং গত মে মাসে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এক লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টনের উপরে পাথর উত্তোলন করে।
মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে উৎপাদনের মাসিক এই নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টির ফলে খনিটি বর্তমানে সরকারের লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার ফলে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খনি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের অর্থনৈতিক এবং জীবন মানের প্রভুত উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সহযোগি হিসেবে মধ্যপাড়া পাথর খনির অবদান অব্যাহত রাখতে খনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা পেলে জার্মানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর মাধ্যমে মধ্যপাড়া পাথর খনি দেশের অর্থনীতির একটি মডেল হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আবু দাউদ মুহাম্মদ ফরিদুজ্জামান বলেন, গত চার বছর থেকে খনিটি লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। লাভের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।