ঢাকা Friday, 26 April 2024

‘নৌকায় ভোট’ দেয়ায় বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ, পুলিশ বলছে ‘অন্য কারণ’

সারাদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: 01:32, 18 June 2022

‘নৌকায় ভোট’ দেয়ায় বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ, পুলিশ বলছে ‘অন্য কারণ’

‘নৌকায় ভোট’ দেয়ায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সন্ত্রাসীরা বসতঘর ভেঙে দিয়েছে অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ বলছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। 

ভুক্তভোগী নারায়ণ নাথের বাড়ি কালিপুর ইউনিয়নের জঙ্গল গুনাগরী এলাকায়। ওই এলাকার নাথপাড়ার ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ বিকেলে উপজেলা সদরে গিয়ে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন। এ সময় তাদের নিরাপত্তা দেয়ার জোর দাবি জানান তারা। 

জানা গেছে, নারায়ণ নাথ মোটরসাইকেল মেরামতের কাজ করেন। তার বড় ভাই সুবল নাথ রিকশা চালান। তারা পাশাপাশি বসবাস করেন। গত বুধবার (১৫ জুন) অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নাথপাড়ার সবাই নৌকা প্রতীকের পক্ষে ছিলেন। 

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শাহদাত আলম ৪১৭ ভোটে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নোমানকে পরাজিত করেন। তৃতীয় হন বিএনপি নেতা ও বাঁশখালীতে পুড়িয়ে ১১ জনকে হত্যামামলার আসামি আমিনুর রহমান চৌধুরী।

নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের লোকজন তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ করেন নারায়ণ নাথ। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ১৪ থেকে ১৫ জন যুবক হাতে রামদা, শাবল, কুড়াল নিয়ে সকাল ১০টার দিকে তাদের ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায়। এ সময় বৃষ্টি পড়ছিল। তখন তারা বাইরে থেকে বলছিল, কেউ ঘর থেকে বের হলে মেরে ফেলবে। এরপর ঘর ভাঙা শুরু করে তারা। দা ও কুড়াল দিয়ে টিন কেটে ফেলা হয়। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে নির্বাচনে কেন ‘নৌকায় ভোট দিয়েছি’, তা জানতে চায় তারা। পরে এসে পুরো পাড়া জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায় হামলাকারীরা।

নারায়ণ নাথ জানান, সন্ত্রাসীরা পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর অনুসারী। তাদের মধ্যে মাসুদ, আবু ছালেহ, তালেব নামে তিনজন ছিলেন বলে জানান ভুক্তভোগী।

এদিকে ঘর ভাঙার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নারায়ণ নাথ লুকিয়ে অন্য একটি ঘর থেকে এই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওর শেষ দিকে তার দিকে একজনকে তেড়ে যেতে দেখা যায়। পরে ভিডিওটি বন্ধ হয়ে যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, কুড়াল ও রামদা হাতে টিনের ঘরটির টিন কেটে ফেলছে পাঁচ যুবক। আধঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা। 

পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চলাচলের পথ নিয়ে পাশের এক ব্যক্তির সঙ্গে নারায়ণ নাথদের বিরোধ চলে আসছিল। ওই পথেই এই টিনের ঘরটি ছিল বলে অভিযোগ অপরপক্ষের। এ কারণে ওই পক্ষের ভাড়াটে লোকজন এসে ঘরটি ভেঙে দেয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো বিষয় নয়। যারা ঘর ভেঙেছে, ভিডিও দেখে তাদের গ্রেফতার করা হবে।

তবে নারায়ণ নাথ বলেন, জায়গা নিয়ে যাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল, তা মিটমাট হয়ে গেছে। নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেয়ার কারণেই আমাদের ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। 

অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নোমানকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।