সিলেটে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে পিকআপ ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আরো দুজন। এছাড়া এদিন বিকেল ৩টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরো একজন।
নিহতরা হলেন - উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পশ্চিম ঠাকুরের মাটি গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলী পাত্র (৫০), সন্তোষ পাত্রের পুত্রবধূ সুচিতা পাত্র (৩০), সুচিতা পাত্রের শিশু মেয়ে বিজলী (৬ মাস), সন্তোষ পাত্রের বোন নীপেন্দ্র পাত্রের স্ত্রী শ্যামলা পাত্র (৫৫), একই বাড়ির নন্দ পাত্রের স্ত্রী সাবিত্রী পাত্র (৩২) ও সুবেন্দ্র পাত্রের মেয়ে ঋতু পাত্র (৬)।
নিহতের স্বজনরা জানান, সন্তোষ পাত্রের মেয়ে অনামিকা পাত্রের জলপান (বউ ভাত) অনুষ্ঠানে লেগুনা দিয়ে জাফলং মোকামপঞ্জি এলাকায় যাচ্ছিলেন স্বজনরা। দরবস্ত পল্লী বিদ্যুতের সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মঙ্গলী পাত্র, সুচিতা পাত্র ও সাবিত্রী পাত্র মারা যান। সুচিতা পাত্রের ছয় মাসের সন্তান বিজলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর শ্যামলা পাত্র ও ঋতু পাত্রের মৃত্যু হয়।
এদিকে দুর্ঘটনায় স্ত্রী, পুত্রবধূ ও নাতনিকে হারিয়ে শোকে কাতর সন্তোষ পাত্র। তিনি জানান, ১৫ দিন আগে তার ছোট মেয়ে অনামিকাকে জাফলংয়ের মোকামপঞ্জি এলাকায় বিয়ে দেন। সোমবার মেয়ের বাড়িতে জলপান অনুষ্ঠান ছিল। তিন ছেলে, ছেলের বউ ও আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে লেগুনায় করে মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে এই দুর্ঘটনায় তার সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল।
সন্তোষ পাত্র বলেন, আমার মেয়ের অনুষ্ঠানের কারণে সবাইকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এতো আনন্দ মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেছে। এ শোক আমি কেমনে সইবো! আমার মৃত্যু হয়ে যদি ওরা বাঁচতো তাহলে এত কষ্ট সহ্য করতে হতো না।
এদিকে এই দুর্ঘটনার পর সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম, তামাবিল হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পরে প্রশাসনের ও স্থানীয় নেতাদের আশ্বাসে জনতা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম।