ঢাকা Friday, 17 May 2024

কৃষিজমি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ

স্টার সংবাদ

প্রকাশিত: 12:06, 2 May 2024

আপডেট: 16:36, 2 May 2024

কৃষিজমি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ

হাইকোর্ট বলেছেন, কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে চাষাবাদের অনুপযোগী করা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারার অপরাধের মধ্যে পড়ে। এই মাটি ক্ষয় চক্রের হাত থেকে অসহায় কৃষকদের বাঁচাতে হবে। কৃষিজমি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই লিখিত আদেশ দেন।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে চাষাবাদের অনুপযোগী করার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের লিখিত আদেশে এমন মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

আদেশে বলা হয়েছে, মাটির উপরের স্তরেই বেশিরভাগ জৈব পদার্থ, পুষ্টি এবং জীবন্ত অণুজীব ঘনীভূত হয়। এটি মাটির সবচেয়ে উর্বর স্তর, যেখানে গাছপালা বেড়ে ওঠে এবং যেখানে পৃথিবীর বেশিরভাগ জৈবিক মাটির কার্যকলাপ ঘটে। উপরের মাটি কাটা হলে মাটির জীবন দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে সাতকানিয়ার কিছু দুর্বৃত্ত অবৈধভাবে বা জোরপূর্বক প্রায় ৪০ থেকে ৫০ ফুট গর্ত করে মাটি কাটছে এবং খনন করছে যার জন্য কৃষকরা সেখানে চাষাবাদ করতে পারছেন না। কৃষিজমি খননের এই কার্যকলাপ সেই এলাকার পরিবেশের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্যেরও ক্ষতি করেছে। এ অবস্থায় এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, বিবাদীদের উচিত এই মাটি ক্ষয় চক্রের হাত থেকে অসহায় কৃষকদের বাঁচানো। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবকিছু জেনেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় না। এখানে উল্লেখ্য যে জমিগুলো গর্ত করা হয়েছে সেই জমিগুলো ঢাকা-কক্সবাজার রেললাইনের খুব কাছে, যা উপরের মাটি কাটার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। এই ধরনের আচরণ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারার অধীনে অপরাধের মধ্যে পড়ে। এসব কারণে আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছি।

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার জন্য একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে মনোনীত করতে হবে। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার মনোনয়নের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে আদেশে। এছাড়া আদেশে বিবাদীদের সাতকানিয়ায় কৃষিজমির উপরের মাটি ভরাট করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যা ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে বাইরে থেকে পলিমাটি এনে তা ভরাট করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে সাতকানিয়া থানার মধ্যে কতটি ইটভাটা রয়েছে এবং তাদের অবস্থা কী, তাদের পরিবেশগত ছাড়পত্র আছে কি না, তা আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিচার বিভাগীয় এ আদেশে।