ঢাকা Tuesday, 05 December 2023

জুমার নামাজে যেসব কাজ করা উচিত নয়

স্টার সংবাদ

প্রকাশিত: 12:31, 17 November 2023

জুমার নামাজে যেসব কাজ করা উচিত নয়

পবিত্র জুমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ইসলামের বিভিন্ন স্থানে পবিত্র জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। তাই এই দিনটিকে সঠিকভাবে পালন করা জরুরি। শুক্রবারে জুমার নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

মোটামুটি সব মুসলমানই জুমার নামাজ আদায় করে থাকেন। কিন্তু এই নামাজের সময় আমাদের কিছু ভুল হয়ে যায়, যা করা মোটেও উচিত নয়। এগুলো হলো - পরিচ্ছন্ন না হয়ে জুমায় যাওয়া, মসজিদে দেরি করে যাওয়া, জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা, মনোযোগ দিয়ে খুতবা না শোনা ও খুতবার সময় কথা বলা। এসব বিষয়ে হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। 

জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করা অতীব জরুরি। অনেকে এই দিনে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে, কোনো রকম জুমার ফরজ দুই রাকাত আদায় করে চলে আসেন। অথচ আবু সাইদ খুদ্‌রি (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য গোসল করা ওয়াজিব (জরুরি)। আর মিসওয়াক করবে এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৮৮০, মুসলিম, হাদিস : ৮৪৬)

জুমার নামাজ কেবল দুই রাকাত নামাজ আদায়ে যথেষ্ট নয়। জুমার খুতবা শোনাও জরুরি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত (সহবাস পরবর্তীকালে) গোসলের মতো গোসল করে এবং নামাজের জন্য আগমন করে, সে যেন একটি উট কোরবানি করলো। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে, সে যেন একটি গাভী কোরবানি করলো। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে, সে যেন একটি শিং-বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করলো। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করলো সে যেন একটি মুরগি কোরবানি করলো। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করলো, সে যেন একটি ডিম কোরবানি করলো।’ (বুখারি, হাদিস : ৮৮১)

জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা নিষিদ্ধ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মসজিদের দিকে যাওয়া জরুরি। জুমার প্রথম আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায় কিংবা অন্য কাজ বন্ধ করে দেয়া অথবা নামাজের জন্য বিরতি দেয়া উচিত। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাইদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘লোকজন নিজেদের কাজকর্ম নিজেরাই করতেন। যখন তারা দুপুরের পরে জুমার জন্য যেতেন, তখন সে অবস্থায়ই চলে যেতেন। তাই তাদের বলা হলো, যদি তোমরা গোসল করে নিতে ভালো হতো ...।’ (বুখারি, হাদিস : ৯০৩, মুসলিম, হাদিস: ৮৪৭)

খুতবা শোনা জুমার নামাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই ঠিকভাবে খুতবা শোনাও জরুরি। তবে যদি মুসল্লি বেশি হওয়ার কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে খুতবার আওয়াজ না শোনা যায়, তবে নীরব থাকা নিয়ম। আবু হুরায়রাহ্‌ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমভাবে অজু করে জুমার নামাজে এলো, নীরবে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনলো, তাহলে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি (অহেতুক) কঙ্কর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক, বাতিল, ঘৃণিত ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য কাজ করলো।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭৩)

জুমার খুতবা শোনা ওয়াজিব। রাসুল (সা.) খুতবার সময় কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।’ (বুখারি, হাদিস: ৯৩৪, মুসলিম, হাদিস : ৮৫১)। খুতবার সময় কেউ কথা বললে তাকে চুপ থাকতে বলাও উচিত নয়। অর্থাৎ খুতবার সময় মুখ পুরোপুরি বন্ধ রাখা চাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে জুমার নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।