ঢাকা Thursday, 25 April 2024

একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দুঃসহ পরিণতি এখন সর্বত্র : রিজভী

স্টার সংবাদ

প্রকাশিত: 23:19, 22 September 2022

একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দুঃসহ পরিণতি এখন সর্বত্র : রিজভী

দেশে পরিকল্পিতভাবে বিএনপির মিছিল ও কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি আরো অভিযোগ করেন, শুধু মিছিল-মিটিংয়েই নয়, বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হামলা ও ধরপাকড় চালাচ্ছে সরকার সমর্থকরা। 

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মুক্তারপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ‘হামলা’ প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ব্যক্তিকেন্দ্রিক একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দুঃসহ পরিণতি এখন গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্র দৃশ্যমান। রক্তপাত ছাড়া শেখ হাসিনার আর কোনো অবলম্বন নেই। শেখ হাসিনার শাসনে গণতন্ত্রের অধঃপতন, ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ, নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ হরণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন নাৎসিবাদের জয়জয়কার বাংলাদেশে।   

মুন্সিগঞ্জের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডার মো. মাসুদ, মুসা ও তোফাজ্জলের নেতত্বে ১৫-২০ জনের সঙ্গে তিন পুলিশ সদস্যসহ একটি দল গতরাতে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আ. হাইয়ের ভাগিনা মো. নিজাম উদ্দিনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে তার সুতার কারখানাটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। এ ঘটনায় আনুমানিক ২ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। এ সময় সন্ত্রাসী কায়দায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয় যেন কেউ আগুন নেভাতে না আসে।

রিজভী বলেন, বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতভর আওয়ামী লীগের লোকজন আ. হাইয়ের পঞ্চসার ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। অধিকাংশ নেতাকর্মী ও সমর্থক এখন বাড়িছাড়া। ইতোমধ্যে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য উল্টো হামলার শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।

এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, শহর বিএনপির আহ্বায়ক এরাদত হোসেন মানু, সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মুনির হোসেন ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতাউর হোসেন বাবুলসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে। 

বিএনপির পক্ষ থেকে এসব ‘মিথ্যা মামলা’র তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী অবিলম্বে সেগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

বিএনপির এই নেতা জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত যুবদল নেতা মো. শাওন, মো. জাহাঙ্গীর ও ছাত্রদল নেতা তারেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি দলের পক্ষ থেকে তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

রিজভী বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ ও তার  অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা মুন্সিগঞ্জ সদর ও শহরে মিছিল বের করবে। লোকমুখে এও শোনা যাচ্ছে, সেই মিছিল থেকে জেলা ও সদর বিএনপির কার্যালয়সহ বিএনপি নেতাকর্মী-সমর্থকদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বাড়িতে বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলকে চাপে ফেলতে সরকারের প্রকাশ্য ও গোপন অমানবিক কৌশলের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বৈরশাসকদের প্রতিরোধ করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে জনগণের এক প্রবল স্রোত। সেই স্রোতে ভাসিয়ে দিতে হবে এ অবৈধ সরকারকে।

রিজভী প্রশ্ন তোলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন আতঙ্কের মধ্যে নিমজ্জিত। বিরোধী রাজনীতির কর্মসূচিতে সহিংস আক্রমণ কোন গণতান্ত্রিক রীতির আওতায় পড়ে?

তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী গণতন্ত্রের আরেকটি নমুনা দেখলাম গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর) মুন্সিগঞ্জে পুলিশের সহিংস তাণ্ডবে। পুলিশ এবং পুলিশের ভেতর থেকে খালি গায়ে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি করছিল বিএনপির সমাবেশে, তারা কারা?