ঢাকা Tuesday, 23 April 2024

দেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার দশমিক শূন্য এক শতাংশ

স্টার সংবাদ

প্রকাশিত: 22:43, 1 December 2021

দেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার দশমিক শূন্য এক শতাংশ

অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বুধবার (১ ডিসেম্বর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস। দেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার দশমিক শূন্য এক শতাংশ। গত এক বছরে দেশে নতুন করে এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭২৯ জন।

এইডস দিবস উপলক্ষে বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এবারের বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমতার বাংলাদেশ, এইডস ও অতিমারী হবে শেষ’।

দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিশ্ব এইডস দিবসের কর্মসূচি পালিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে সম্ভাব্য এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার। দেশে গত এক বছরে নতুন করে এইচআইভি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৭২৯ হন। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ১৮৮ জন। গত এক বছরে ২০৫ জন মারা গেছেন। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট এইচআইভি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭৬১ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৫৮৮ জন। দেশে গত এক বছরে এইচআইভি টেস্ট হয়েছে ৬ লাখ ২৮ হাজার ৩১২ জন। এছাড়া ব্লাড স্ক্রিনিং করা হয়েছে আরো ৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৭ জনের।

গত এক বছরে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ জনগোষ্ঠী ১৮৬, রোহিঙ্গা ১৮৮, বিদেশফেরত প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্য ১৪৪, ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারী ৬১, নারী যৌনকর্মী ১৭, সমকামী ৬৭, পুরুষ যৌনকর্মী ৫৩ এবং ট্রান্সজেন্ডার ১৩ জন। এক বছরে আক্রান্ত ৭২৯ জনের মধ্যে চিকিৎসাসেবার আওতায় এসেছেন ৬৪২ জন। দেশব্যাপী ১১টি সরকারি হাসপাতাল থেকে এইডস আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা (এসবিডি) পাচ্ছেন। এছাড়া দেশব্যাপী ২৮টি সরকারি হাসপাতালের এইচআইভি টেস্টিং সেন্টার থেকে বিনামূল্যে এইচআইভি টেস্ট করা হচ্ছে।

ইউনিসেফের সহায়তায় মা হতে শিশুতে এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধ কার্যক্রম ১৩টি সরকারি হাসপাতালে চালু আছে। পিএমটিসিটি কার্যক্রমের আওতায় গত এক বছরে এইচআইভি টেস্ট হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ২১৯ জনের। এক বছরে ২১ জন গর্ভবতীর এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। পুরনো ও নতুন মিলিয়ে এক বছরে ৭২ জন পিএমটিসিটি সেবা নিচ্ছেন। এআরটি নিচ্ছেন ৭২ জন গর্ভবতী। গত এক বছরে যেসব গর্ভবতী মা এআরটি নিচ্ছেন তাদের মধ্যে ৫৩ জন শিশু জন্মদান করেছেন। এই ৫৩ জনের মধ্যে ৪৩ শিশু এইচআইভি নেগেটিভ। বাকি শিশুদের পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। এইচআইভি পজিটিভ গর্ভবতী মা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এআরটি গ্রহণ শুরু করলে তিনি এইচআইভি নেগেটিভ শিশুর জন্ম দিতে পারেন।

এছাড়া শিরায় মাদক গ্রহণকারী, নারী-পুরুষ যৌনকর্মী/হিজড়াসহ সকল ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সমন্বয়ে দেশব্যাপী গ্রুপ-ইন-সেন্টার (ডিআইসি)-এর মাধ্যমে এইচআইভি প্রতিরোধ কার্যক্রম চলমান রেখেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় এইডস/এসটিডি প্রোগ্রাম। এছাড়া টিডিসি, ডকুমেন্টারিসহ অন্যান্য কার্যক্রমের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার কাজ চলমান আছে। পুলিশ ও কারাগারে এইচআইভি টেস্টিং কার্যক্রম অচিরেই শুরু হচ্ছে।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সৈয়দ মজিবুল হক (অতিরিক্ত সচিব জনস্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ বারদান জুং রানা, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, ডা. মো. খুরশীদ আলম (পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও লাইন ডাইরেক্টর টিবি-লেপ্রোসি ও এইডস/এসটিডি প্রোগ্রাম) প্রমুখ।