চট্টগ্রাম নগরের বন্দরটিলা ও দক্ষিণ হালিশহরে কলেরার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে। এটি চলবে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বন্দর থানার অধীনে ৩৮ এবং ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষকে ৪৫টি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রথম ডোজ কলেরার টিকাদান সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আইসিডিডিআর’বির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তত্ত্বাবধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও আইসিডিডিআর’বি এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বন্দর থানার অধীনে ৩৮ এবং ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে (বন্দরটিলা ও দক্ষিণ হালিশহর) বসবাসকারীদের জন্য কলেরার টিকা প্রদান কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলজিক্স কো. লিমিটেডের তৈরি দুই ডোজের ইউভিকল প্লাস নামে মুখে খাওয়ার কলেরার টিকা ১ বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সীদের প্রদান করা হবে। গর্ভবতী মহিলা এবং যারা বিগত ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা গ্রহণ করেছেন, তারা ব্যতীত সবাই এই টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, কলেরা একটি ডায়রিয়াজাতীয় খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ, যার প্রাদুর্ভাব গঙ্গা বদ্বীপ থেকে শুরু করে ইউরোপ ও আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত। নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা কলেরার প্রাদুর্ভাবের জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এটি দেহে দ্রুত পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে এবং সময়মতো চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। প্রতিবছর পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশসহ ৮টি উন্নয়নশীল দেশে বছরে ১ লাখেরও বেশি মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হন।
চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকায় কলেরার প্রাদুর্ভাব বেশি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিকাদান কর্মসূচির আওতাভুক্ত এলাকায় মাইকিং করে টিকা কেন্দ্রের অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হবে। পরবর্তীতে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কমপক্ষে ১৪ দিন অন্তর প্রদেয় এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ও নিরাপদ।
এই টিকা নেয়ার ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা নেয়া যাবে না। দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, গ্যাভি-এর আর্থিক সহায়তায় এই টিকাদান উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা আইসিডিডিআর’বি ও অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য কলেরা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা ২০১৯-৩০ বাস্তবায়ন করছে। এর ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ২০২০ ও ২০২২ সালে কলেরা টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে ৩৫ লক্ষাধিক ঢাকাবাসীকে কলেরার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
