ঢাকা Thursday, 25 April 2024

পাবনায় ক্যানোলা খুলতে গিয়ে শিশুর আঙুল কাটলেন আয়া

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 00:54, 5 March 2023

পাবনায় ক্যানোলা খুলতে গিয়ে শিশুর আঙুল কাটলেন আয়া

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে এক শিশুর ক্যানোলা খুলতে গিয়ে তার ডান হাতের কনিষ্ঠা আঙুলের অগ্রভাগ (নখের অংশটুকু) কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক আয়ার বিরুদ্ধে৷

গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুটির নাম মিষ্টি পাল। তার বাবার নাম চন্দন পাল। তাদের বাড়ি জেলার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের কামারহাট গ্রামে।

অভিযুক্ত আয়ার নাম আঞ্জুয়ারা খাতুন বলে জানা গেছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার দাপুনিয়া এলাকায়। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

শিশুটির দাদা কার্তিক পাল জানান, ঠান্ডাজনিত কারণে তার ২৪ দিন বয়সী নাতনি মিষ্টি পালকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকালে শিশুটির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে সেদিন দুপুরে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে জানান চিকিৎসকরা।

এদিকে ছাড়পত্র দেয়ার প্রক্রিয়া চলার মাঝে নার্সের বদলে শিশুটির হাতে লাগানো ক্যানোলা খুলতে যান আয়া আঞ্জুয়ারা খাতুন। সেসময় হাতের ক্যানোলার সঙ্গে থাকা সার্জিক্যাল টেপ কাঁচি দিয়ে কাটতে গিয়ে তিনি শিশুটির ডান হাতের কনিষ্ঠা আঙুলের অগ্রভাগ (নখের অংশটুকু) কেটে ফেলেন। তখন শিশুটির চিৎকারে অন্যান্য রোগী ছুটে এলে  সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান আঞ্জুয়ারা। 

এ ঘটনার পর মিষ্টি পালকে শিশু ওয়ার্ড থেকে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছে সে।

শিশুটির মা শিল্পী পাল বলেন, ওই ঘটনার চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমার মেয়ে এখন ভালো আছে। মেয়ে সুস্থ হলেই আমরা খুশি। আমাদের কোনো অভিযোগ বা চাওয়া-পাওয়া নেই।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাতে হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে কর্তব্যরত জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স নাজিরা খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটির পর শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ড থেকে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি ভালো আছে। ভয়ের কারণ নেই। দু-একদিনের মধ্যে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, কোন আয়া এ কাজ করেছেন আমরা জানি না। আমাদের ধারণা, হাতের সার্জিক্যাল টেপ সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে কাটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। 

হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। কার অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটলো - তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে অভিযুক্ত আয়া আঞ্জুয়ারা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি কাঁচি দিয়ে ক্যানোলা লাগানো টেপ কাটতে গিয়ে টের পাইনি যে, কনিষ্ঠা আঙুল কাঁচির মধ্যে ছিল। এটা আমার ভুলবশত হয়েছে। আমি পাঁচ বছর ধরে আয়ার কাজ করছি, কিন্তু আগে এমন ভুল হয়নি। 

উল্লেখ্য, গত বছর জুলাই মাসে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় হাতের তিনটি আঙুল হারায় ১৩ মাস বয়সী শিশু তাছিম।