ঢাকা Wednesday, 24 April 2024

কুড়িগ্রামে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: 00:22, 2 July 2022

কুড়িগ্রামে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা হয়রানিমূলক‘ মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। 

শুক্রবার (১ জুলাই) দুপুরে উলিপুর প্রেসক্লাব হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চেয়ারম্যানের স্ত্রী গোলেনুর বেগম। এ সময় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই আতাউর রহমান আতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরাজিত প্রার্থীরা তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ জুনের একটি ঘটনাকে উল্লেখ করে ১৮ দিন পর গত ২৭ জুন পরিবারের স্বজনদের সাক্ষী করে গৃহবধূ মোহনা আক্তার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি সাজানো ধর্ষণচেষ্টা মামলা উলিপুর থানায় করেন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে পরাজিত প্রার্থীদের যোগসাজশে এই হয়রানিমূলক মামলাটি পুলিশ তদন্ত ছাড়াই নথিভুক্ত করে। 

সংবাদ সম্মেলনে ওই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জনিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

গোলেনুর বেগম আরো বলেন, মামলার বাদী মোহনা আক্তার ঘটনার দিন (৯ জুন) স্বামী-সন্তানসহ আমাদের বাড়িতে আসেন জনগণনায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। পরে তারা জনশুমারির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেতরাই বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। এর ১৮ দিন পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা মামলা করা হয়। মামলায় মোহনা সাক্ষী করেন তার আপন ভাসুর ফিরোজ আলম ও মামা শ্বশুর লিয়াকত আলীকে, যারা ওইদিন আমাদের বাড়িতেই আসেননি। 

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, বাদী মোহনা আক্তারের স্বামী ফেরদৌস একজন মাদক সেবনকারী ও মাদক কারবারি। এর আগে মাদকসহ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে তার ছয় মাসের জেল হয়। 
অন্যদিকে মোহনা আক্তার চলতি বছর মার্চ মাসে কিশোর-কিশোরীদের ভাতার কথা বলে ৪৬ জনের কাছ থেকে অবৈধভাবে লক্ষাধিক টাকা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি প্রতিবেশী বেবী আক্তারের কাছ থেকে মোহনা আক্তার দেড় লাখ টাকা ধার নেন। বিনিময়ে ইমিটেশনের গহনা বন্ধক দিয়ে তাকে ঠকানোর চেষ্টা করা হয়। এ নিয়ে উলিপুর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে মোহনা আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, ধর্ষণচেষ্টার পর আমি জনশুমারির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেতরাই বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে যাই। সেখানে চারদিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। পরে সালিশ বৈঠকের কারণে মামলা করতে ১৮ দিন বিলম্ব হয়। 

কিশোর-কিশোরীদের ভাতা দেয়ার নামে অর্থ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, আমি ২০ জনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম, যা ফেরত দিয়েছি। এছাড়া তার স্বামীর মাদক মামলায় তিন মাসের কারাভোগের কথাও স্বীকার করেন তিনি। 

গোলেনুর আক্তারের অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, আমি দেড় লাখ টাকা ধার নিয়েছিলাম। থানায় অভিযোগ দেয়ার পর এক লাখ টাকা ফেরত দিয়েছি। ৫০ হাজার টাকা তিনি পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আব্দুল বাতেন, মিজানুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ জানান, বাদীর পরিবার অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মামলাটি করে থাকতে পারে। কারণ তার স্বামী একজন মাদকাসক্ত এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্নজনের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের স্ত্রী গোলেনুর বেগম, ভাতিজি জেসমিন আক্তার, ফুফু শাহনাজ পারভীনসহ ওই ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইমতিয়াজ কবির জানান, ধর্তব্য কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে আইনগতভাবে প্রাথমিক তদন্ত করার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।